অন্ধকার রাত্রি। বাইরে বৃষ্টির ঘন ঘন শব্দ। অফিসের কাজ শেষ করলাম মাত্র। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলাম রাত সাড়ে বারোটার উপরে বাজছে। বাইরে গাড়ি পাওয়া যাবে না এখন। বাড়ি পৌঁছতে কষ্ট হবে। হেঁটে হেঁটে বাড়ি পৌঁছতে ৩০-৪০ মিনিটের জায়গা অতিক্রম করতে হয়। যা হোক, সবকিছু গুছিয়ে রেইনকোটটা পরে রাস্তায় বের হলাম। ঝুম বৃষ্টি। আসমান ভীষণ জোরে ডাকছে। যেন এক্ষুণি ফেটে পড়বে। আমি বাড়ির দিকে হাটতে লাগলাম। প্রায় পাঁচ মিনিটের জায়গা অতিক্রম করে ফেলেছি, এমন সময় বৃষ্টির অবস্থা আরো বেগতিক হতে লাগলো। শুরু হলো ভীষণ ঝড়। বজ্রপাতের কারণে কী করবো ভেবে পাচ্ছি না। পেঁছন দিকে ফিরে যাওয়ার কোনো উপায় নেই। না, আমাকে বাড়ির দিকে রওয়ানা হতেই হবে। দেখা যাক, আজ কপালে কী ঘটে! আমি সামনের দিকে দ্রুত পায়ে হাঁটা দিলাম। ভীষণ ভয় হচ্ছে। কখন বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে মারা যাই। বাতাসের অবস্থা আগের চেয়ে আরো বেগতিক হয়েছে। সামনে আর এগোতে পারছি না। বাতাস যেন শক্ত দেয়াল হয়ে বসেছে। আমি আর টিকে থাকতে পারছি না। এক্ষুণি যেন জ্ঞান হারিয়ে ফেলবো। মাথা এলোমেলো হয়ে আসছে। এমন সময় কারো আসার শব্দ পেলাম। গাড়ি করে নয়। হেটে হেটে। আমার পেছন দিকে। নূপুরের শব্দ পাচ্ছি। তাও ভীষণ জোরে। এত জোরে যে, মনে হচ্ছে কেউ ঘণ্টা বাজাচ্ছে। কিন্তু এখন কে এদিকে আসবে? আমি সঙ্গে সঙ্গে পেছন ফিরে তাকালাম। না, কই, কেউ নেই তো! তবে কি আমি ভুল শুনলাম? হতে পারে। মনের ভুল হবে হয়তো। আমি আবার সামনের দিকে হাঁটার চেষ্টা করলাম। চোখ দিয়ে কিছু দেখার ইয়ত্তা আমার নেই। কি দেখছি এখন তা বলতে পারবো না। সারা ভুবন যেন আলোকিত হচ্ছে আবার অন্ধকারে মিলিয়ে যাচ্ছে। গাছগুলো এদিকের মাটিতে একবার শুয়ে পড়ছে আবার ওদিকের মাটিতে শুচ্ছে। আমার চোখের সামনে এখনই তিন তিনটে গাছ ভেঙে পড়লো। ভাগ্যিস আমার উপর পড়েনি। এই গাছগুলোর একটিও যদি আমার উপর পড়তো নির্ঘাত আমি মারা যেতাম। গাছগুলোকে পাশ কাটিয়ে আমি হাটতে লাগলাম। আবার সেই শব্দ। না, আমি পেছনে তাকাবো না। হাঁটা বন্ধ করলাম না। হাটতেই থাকলাম। কিন্তু এখনো সেই শব্দ শোনা যাচ্ছে। নূপুরের শব্দের সাথে অন্য ধরণের শব্দ শুনতে পেলাম এবার। ভয় পেয়ে গেলাম। কে আমার পেছনে? সঙ্গে সঙ্গে ঘুরে তাকালাম। একি! কে এটা? আঃ..........................
তারপর আর আমার কিছু মনে নেই। কালবেলা চোখ খুলল যখন আমি নিজেকে বিছানায় আবিষ্কার করি। রাতে কী হয়েছিল সেই ঘটনা এখনো আমার অজানা। মাথায় হাত দিয়ে দেখলাম আমার গাঁয়ে অনেক জ্বর এসেছে। আমার ঘরে এমন সময় চাচা প্রবেশ করলেন। আমি চাচাকে জিজ্ঞেস করলাম কী হয়েছিল রাতে। চাচা কিছুক্ষণ চুপ করে থাকলেন। কিন্তু পরক্ষণেই যা বললেন আমি তার জন্য প্রস্তুত ছিলাম না।
কিছুকাল আগে নাকি এই রাস্তায় একটি মেয়ে যাতায়াত করার সময় গাড়ি এক্সিডেন্টে মারা যায়। কিন্তু কে মেরেছে তার হদিস খোঁজে পাওয়া যায় না। এই মেয়েটির পরিবারের কোনো সন্ধান না পাওয়া মেয়েটিকে কবর দেওয়া হয় রাস্তার পাশে। তেমনভাবে কেউ ঘটনাটাকে মাথায় নেয়নি। ধারণা করা হয় প্রতি রাতে মেয়েটি রাস্তায় ঘুরে ঘুরে ওই গাড়ির অপেক্ষা করে। এজন্য কেউ গভীর রাত্রিবেলা এই রাস্তা ধরে যাতায়াত করে না।
পরে আমি জানতে পারি এই ঘটনা শুধু আমার সাথে নয়, এর আগেও নাকি আরো অনেকের সাথে ঘটেছে। তারপর থেকে আমি আর এই রাস্তা ধরে রাত বারোটার পরে কখনো আসিনি।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
লেখার সাথে বিষয়ের সামঞ্জস্যতা
ব্যাখ্যায় লেখকের বক্তব্য
বাইরে বৃষ্টির ঘন ঘন শব্দ
২৬ জানুয়ারী - ২০২২
গল্প/কবিতা:
২৭ টি
বিজ্ঞপ্তি
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।